আহলান সাহলান মাহে রমজান প্রতিবছর রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বানী নিয়ে আমাদের মাঝে উপস্থিত হয় ইবাদতের মাস রমজানুল মোবারক।
আহলান সাহলান মাহে রমজান প্রতিবছর রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বানী নিয়ে আমাদের মাঝে উপস্থিত হয় ইবাদতের মাস রমজানুল মোবারক।
মাহে রমজান এমনই এক বরকতময় মাস, যার আগমনকে স্বাগত জানিয়ে স্বয়ং রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবায়ে কিরামকে মোবারকবাদ দিয়ে সুসংবাদ প্রদান করেছেন, ‘তোমাদের সামনে রমজানের পবিত্র মাস এসেছে, যে মাসে আল্লাহ তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করেছেন।’ (মুসলিম)
রমজান মাসকে বেশি করে ইবাদতের কাজে নিয়োজিত করার বিষয়ে পূর্ব-পরিকল্পনা ও পরামর্শ তুলে ধরার চেস্টা করছি-
* মানসিক প্রস্তুতি: মাহে রমজানকে মনের মাঝে ধারণ করে সর্বপ্রথম মানসিক প্রস্তুতি নেয়া দরকার।এবাদতের মৌসুম মনে করে এ মাসকে কীভাবে কাজে লাগাবো,অন্য মাসের চেয়ে বেশি করে কী আমল করবো এবং স্বাভাবিক ইবাদতের চাইতে অতিরিক্ত আর কী ইবাদত পালন করব? সে পরিকল্পনা এখন থেকেই করা দরকার।
*দোয়া বা প্রার্থনা : রমজান আসার আগে আল্লাহর কাছে রমজান পর্যন্ত হায়াত বৃদ্ধি এবং রমজানের রোজাগুলো সুস্থতার সঙ্গে পালন করার তওফিক কামনা করে বেশি বেশি প্রার্থনা করা উচিত।গুরুত্বপূর্ণ দুআ ও তাসবিহসমূহ রমজানের পূর্বেই শিখে নেয়ার চেষ্টা করলে ভালো।
* ঈদের কেনা-কাটা: রমজানের আগেই ঈদের কেনাকাটা করা এবং কিছু টাকা বাচিয়ে গরিব মানুষের মাঝে বন্টন করার পরিকল্পনা করা।
**কোরআন শিক্ষা :রমজান মাসে কোরআন নাজিল হয়েছে। রাসুল (সা.) এ মাসে অধিক পরিমাণ কোরআন তিলাওয়াত করতেন। হাদিসে এসেছে, এ মাসে প্রতিদিন জিবরাইল (আ.) রাসুল (স:)এর কাছে আগমন করতেন। রাসুল (স:)তাকে কোরআন শোনাতেন। তাই এই মাসে পবিত্র কোরআন অন্ততপক্ষে একবার খতম করার নিয়ত রাখা উচিত। এ জন্য রমজান আসার আগেই বিশুদ্ধ কোরআন তিলাওয়াত শিক্ষা করে নিতে হবে অথবা রমজানে কুরআন শিক্ষার পরিকল্পনা গ্রহন করতে হবে।
* পবিত্র কুরআন অধ্যয়নের জন্য একটি সময় নির্ধারণ করা। যারা স্মার্ট ফোন ব্যবহার করেন তারা কুরআন অধ্যয়নের জন্য সুন্দর দেখে এ্যাব ডাউনলোড করতে পারেন।
*রোজার মাসয়ালা-মাসায়েল শিক্ষা করা : এটা অবশ্যই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে, রমজানের আগমনের আগেই রোজার মাসয়ালাগুলো জেনে নিতে হবে, পরিবারের লোকদেরও তা শিক্ষা দিতে হবে এবং বেশি বেশি ইসলামি বই-পত্র অধ্যয়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
*পাপ কাজ পরিত্যাগ : রমজান আসার আগেই যাবতীয় পাপ কাজ পরিত্যাগ করতে হবে, যাতে রমজান মাসের পবিত্রতা রক্ষার্থে এ মাসে সব ধরনের পাপ কাজ থেকে দূরে থাকার অভ্যাস তৈরি হয়। যাদের ধূমপানের অভ্যাস আছে, তাদের দায়িত্ব রমজানের আগেই তা পরিত্যাগ করা। যারা অশ্নীল কাজে জড়িত হওয়া কিংবা অশ্নীল ছবি-ভিডিও দেখায় অভ্যস্ত, তারা যেন রমজানের আগেই এসব কাজ থেকে ফিরে আসে এবং আল্লাহর কাছে তওবা করে নেয়। গিবত, পরনিন্দা, হিংসা, বিদ্বেষ, চোগলখুরি, অহঙ্কার ও কৃপণতার মতো গর্হিত কাজগুলো অবশ্যই পরিত্যাগ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
* ইতিকাফ: রমজানের শেষ দশদিন ইতিকাফ করার নিয়ত করা যেতে পারে এক্ষেত্রে এখন থেকেই পরিকল্পনা করা উচিত।
*দান-সদকা: অধিক পরিমাণে দান-সদকা করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা। প্রয়োজনে দান-সদকার জন্য আলাদা বাজেট বা অর্থ সঞ্চয় করে রাখা যেতে পারে।
*যাকাত-ফেতরা: যাদের উপর যাকাত ফরজ রমজানের আগেই তাদের যাকাতের হিসাব সম্পন্ন করে নেয়া দরকার এবং ফেতরার টাকাও আলাদা করে রাখা উচিত।
সওয়াবের কাজের পরিকল্পনাও একটি সওয়াবের কাজ। তাই আসুন রমজানের পূর্বেই রমজানকে বরণ করে নেয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করি এবং রমজান মাস আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে কাজে লাগাই। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদেরকে পরিকল্পনা অনুযায়ী আমল করার তাওফিক দান করুন।
নিউইয়র্ক প্রবাসী রেজাউল করিম
প্রাক্তন ঢাবিয়ান
ইসলামিক হিস্ট্রি এন্ড কালচার
০৪টি কলেজের পাঠদানের অনুমতি প্রত্যাহার এবং ০১টি কলেজের পাঠদানের অনুমতি স্থগিতকরণ প্রসঙ্গে।
January 27, 2025
Comments 0