ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিশাল র্যালি করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার বিকেলে নয়া পল্টনে সড়কে ‘গাজা ও রাফায় গণহত্যার প্রতিবাদে ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশে’ এ সমাবেশ ও মিছিল হয়। কাকরাইল থেকে ফকিরেরপুল পর্যন্ত পুরো সড়কে মানুষের ঢল নামে।
ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিশাল র্যালি করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার বিকেলে নয়া পল্টনে সড়কে ‘গাজা ও রাফায় গণহত্যার প্রতিবাদে ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশে’ এ সমাবেশ ও মিছিল হয়। কাকরাইল থেকে ফকিরেরপুল পর্যন্ত পুরো সড়কে মানুষের ঢল নামে।
ঢাকা মহানগর বিএনপি, যুব দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, মহিলা দল, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মী-সমর্থকরা এই মিছিলে অংশ নেয়…নেতা-কর্মীদের অনেকের হাতে ছিল বাংলাদেশ এবং প্যালেস্টাইনের জাতীয় পতাকা। মিছিলটি কাকরাইল, শান্তিনগর, মালিবাগ মৌচাক, মগবাজার, বাংলা মোটর হয়ে সোনারগাঁও মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ফিলিস্তিনিদের পাশে থাকার দলের অঙ্গীকারের কথা দৃপ্ত কণ্ঠে ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, মুসলিম বিশ্বের যেসব মোড়ল দেশ নিজেদের রাজত্ব বাঁচানোর জন্য নিজেরা নেতৃত্ব দিচ্ছে না তাদের প্রতি আল্লাহর অভিশাপ নেমে পড়বে। তারা নেতৃত্ব দিলে এবং মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করলে… ফিলিস্তিনের এই অবস্থা হতো না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ফিলিস্তিনে যে নারকীর হত্যাচার-হত্যা হচ্ছে, তা দেখে আমাদের মনে হতে পারে যে শুধু তাদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। আসলে বিষয়টি তা নয়, এক সময় তারা ধীরে-ধীরে বিশ্বের সব মুসলমানকে নিঃশেষ করার চেষ্টা করবে। এরপরও মুসলিম বিশ্বের মোড়লরা চুপ করে রয়েছে।
বাংলাদেশি অনেক যুবক ফিলিস্তিনের হয়ে যুদ্ধ করছে উল্লেখ করে মির্জা আব্বাস বলেন, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকলে ইসরাইল এমন অপকর্মের সাহস পেত না। একজন ছাত্র ভাই বলেছে, যদি বর্ডার থাকতো তাহলে আমরা ফিলিস্তিনে যুদ্ধ করার জন্য নেমে পড়তাম। আমি তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলতে চাই, যদি আজকে সুযোগ হতো, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি, আল্লাহ রহমতে বিশ্বের যে কোনো দেশে গিয়ে যুদ্ধ করতাম।
মির্জা আব্বাস আরো বলেন, জাতিসংঘ কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এই অত্যাচার চলবে। ধীরে ধীরে মুসলমানদের ধ্বংস করে দেবে ইসরাইল। শুধু ইসরাইলে নয়, প্রতিবেশী রাষ্ট্রেও মুসলমানদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু আমার রাষ্ট্র তার প্রতিবাদ করে না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, বিএনপি সবসময় ন্যায়ের পক্ষে, মানবতার পক্ষে। ফিলিস্তিন সম্পর্কে অন্তর্বর্তী সরকারের এখনো আলাপ পাইনি। অনেক সুশীল রয়েছে, তাদের সাড়া মিলছে না।
মুসলিম বিশ্বের দ্বিধাবিভক্তির কারণে ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতন চলছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে ইসরাইলের আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও রয়েছে। বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়া ঠেকাতে সবাই ব্যস্ত, কিন্তু ফিলিস্তিনের পক্ষে ব্যস্ত নয় বলে মন্তব্য করেন গয়েশ্বর।
ইসরাইলিদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে জানিয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা আজকে এ সভা থেকে দাবি করি, নৃশংস অত্যাচারী ইসরাইলের সরকার এবং তার বাহিনীগুলোকে প্রতিহত করার ব্যবস্থা নেয়া হোক। নিরপরাধ নারী-পুরুষ-শিশুদের হত্যার এই নৃশংসতা অবিলম্বে বন্ধ করা হোক। আমরা বিশ্বের সব মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানাই ঐক্যবদ্ধভাবে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো দরকার। আমাদের বাংলাদেশে যে অন্তর্বর্তী সরকার আছে আমরা তাদের কাছে অনুরোধ করব এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার জন্য।
তিনি বলেন, যারা এই অপকর্ম সহ্য করে তারাও মানবতা বিরোধী কাজ করছে। আমি দাবি করব, ইসরাইলের এই মানবতা বিরোধী অপরাধ দমন করার জন্য যা কিছু করা প্রয়োজন তা করা উচিত। আমার বন্ধুরা বলেছেন, ইসরাইলি পণ্য বয়কটের কথা।
ইন্দো-মার্কিন ষড়যন্ত্রে ফিলিস্তিনিরা আজকে নির্যাতিত উল্লেখ করে স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ইন্দো-মার্কিন ষড়যন্ত্রের কারণে আজকে ফিলিস্তিনি জনগণ গণহত্যা, নিপীড়নের শিকার হচ্ছে যুগের পর যুগ, দশকের পর দশক। তার কোনো প্রতিকার আমরা দেখছি না।
জাতিসংঘের কোনো রেজুলেশনের তোয়াক্কা ইসরাইলিরা করে না, জাতিসংঘের কোনো সিদ্ধান্ত তারা মেনে নেয় নাই।আজকে সারা বিশ্বে এবং কি যুক্তরাষ্ট্রেও ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ব্যাপকভাবে আন্দোলন হচ্ছে কিন্তু এই গণহত্যা বন্ধের কোনো ইশারা ইঙ্গিত দেখছি না। আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ এবং অবিলম্বে গণহত্যা বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে ও বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন- ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, আবদুস সালাম পিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, আবদুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম, রকিবুল ইসলাম বকুল, শামীমুর রহমান শামীম, সাইফুল আালম নিরব, যুব দলের আবদুল মোনায়েম মুন্না, নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানি, রাজীব আহসান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শহিদুল ইসলাম বাবুল,মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা দলের ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক আহমেদ খান, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহীম, ছাত্রদলের রাকিবুল ইসলাম বকুল ও নাছির উদ্দীন নাছির প্রমুখ ছিলেন।
০৪টি কলেজের পাঠদানের অনুমতি প্রত্যাহার এবং ০১টি কলেজের পাঠদানের অনুমতি স্থগিতকরণ প্রসঙ্গে।
January 27, 2025
Comments 0