প্রচলিত ম্যানুয়াল পদ্ধতির পাশাপাশি অনলাইনে বিবাহ ও তালাক নিবন্ধন সম্পাদন করা যাবে। সম্প্রতি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত ‘মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালা, ২০০৯’ সংশোধন করা হয়েছে। এছাড়া কন্যার ক্ষেত্রে বিদ্যমান ফরমের ‘কুমারী’ শব্দটি বাদ দিয়ে অবিবাহিত কি না শব্দ যুক্ত করা হয়েছে। বিয়ের ক্ষেত্রে সাক্ষী দু’জনের পরিবর্তে তিনজন এবং বর-করে উভয়ের স্বাক্ষরের পাশাপাশি টিপসই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
সোমবার সংশোধিত প্রজ্ঞাপন গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।
সংশোধিত বিধিমালা অনুযায়ী অনলাইন নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ডিজিটাল মাধ্যমে বা সরকার থেকে নির্ধারিত পদ্ধতিতে ফি পরিশোধ করা যাবে।
নিকাহ্ ও তালাক নিবন্ধন পদ্ধতি প্রসঙ্গে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, নিকাহ্ ও তালাক নিবন্ধন ম্যানুয়ালি বা অনলাইন পদ্ধতিতে সম্পাদন করা যাবে।
এতে আরও জানানো হয়, অনলাইন নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ফরম ‘ঘ’ তে যেসব ব্যক্তির স্বাক্ষর প্রয়োজন তারা সরকার থেকে নির্ধারিত পদ্ধতিতে ডিজিটাল মাধ্যমে বা সরাসরি স্বাক্ষর এবং নিরক্ষর ব্যক্তির ক্ষেত্রে টিপসই দেবেন।
আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিয়ে ও তালাক নিবন্ধন ম্যানুয়ালির পাশাপাশি অনলাইন পদ্ধতিতে সম্পাদন করার বিষয়ে আইনি জটিলতা কেটেছে। এখন এ বিষয়ে সফটওয়্যার তৈরিসহ অন্যান্য কাজ সম্পাদন করা হবে। এরপর অনলাইন পদ্ধতি চালু হবে।
নতুন বিধিমালায় বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের ফরমে বেশি কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিদ্যমান ফরমে (ফরম ঘ, ক্রমিক ৫) কন্যার ক্ষেত্রে কুমারী, বিধবা অথবা তালাক প্রাপ্ত নারী কী না? তা উল্লেখ করার বিধান ছিল। এখানে কুমারী শব্দটি নিয়ে নানা মহলের আপত্তি ছিল। কেউ কুমারী কি না তার প্রমাণকেরও কোন বিধান কার্যত নেই। এক্ষেত্রে ‘কুমারী’ শব্দের পরিবর্তে ‘অবিবাহিতা’ শব্দটি প্রতিস্থাপন করার কথা বলা হয়েছে। পরের ক্ষেত্রেও বর অবিবাহিত, বিপত্নীক অথবা তালাক প্রাপ্ত পুরুষ কি না? সেটা যুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে বিদ্যমান ফরমে বর ও কন্যার বয়স কত তা উল্লেখ করতে হলেও বয়সের প্রমাণকের কোনো বিধান ছিল না। এক্ষেত্রে উভয়ের বয়স, জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী অথবা জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে জন্ম নিবন্ধন/জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) সনদ/ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) বা সমমান সনদ/ পিতা-মাতা বা আইনগত অভিভাবকের প্রদত্ত হলফনামা অনুযায়ী বয়স ও জন্ম তারিখ উল্লেখ করার কথা বলা হয়েছে। বর ও কন্যা উভয়ের পাসপোর্ট সাইজের ছবি যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। বিদ্যমান দু’জন সাক্ষীর পরিবর্তে তিনজন সাক্ষীর বিধান করা হয়েছে।
বিদ্যমান ফরমে কোনো তারিখে বিবাহের কথাবার্তা হয়েছে সেটা উল্লেখ করার কথা রয়েছে। এটার পরিবর্তে যে তারিখে বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে সেটা উল্লেখ করতে বলা হয়েছে।
দেন মোহরের পরিমান এবং তার মুয়াজ্জল/অমুয়াজ্জল ও পরিশোধের বিষয়টি বিদ্যমান ব্যবস্থায় অংকে না কথায় লেখা হবে তা উল্লেখ ছিল না। এবার পৃথকভাবে অংকে ও কথায় লেখার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
বিদ্যমান ফরমে স্বামীর তালাক প্রদানের ক্ষমতা অর্পণ করিয়াছে কিনা? করিয়া থাকলে কি কি শর্তে বলে একটি বিধান ছিল এবার সেটা বিলুপ্ত করা হয়েছে। ফরমে বর-কন্যার স্বাক্ষরের পাশাপাশি টিপসই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
Comments 0