রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে, কোনো শান্তি চুক্তির আওতায় ইউক্রেনে ন্যাটোর শান্তিরক্ষী বাহিনীকে রাশিয়া কখনোই মেনে নেবে না। সৌদি আরবের রিয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পর তিনি এ মন্তব্য করেন।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে, কোনো শান্তি চুক্তির আওতায় ইউক্রেনে ন্যাটোর শান্তিরক্ষী বাহিনীকে রাশিয়া কখনোই মেনে নেবে না। সৌদি আরবের রিয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পর তিনি এ মন্তব্য করেন।
ল্যাভরভ বলেন, “অন্য কোনো পতাকার অধীনে সশস্ত্র বাহিনী আসলেই কিছু পরিবর্তন হয় না। এটি পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য।”
রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র একমত হয়েছে যে, তারা যুদ্ধের অবসান নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করার জন্য দল গঠন করবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, “আজকের দিনটি একটি দীর্ঘ ও কঠিন যাত্রার প্রথম ধাপ, তবে গুরুত্বপূর্ণ এক ধাপ।”
এই আলোচনায় ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, যা নিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
প্রথমবার মুখোমুখি রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আক্রমণ শুরুর পর এটি প্রথমবারের মতো যে, রাশিয়া ও মার্কিন প্রতিনিধিরা সরাসরি বৈঠকে মিলিত হলো। বৈঠকে মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ, রুশ প্রেসিডেন্টের সহকারী ইউরি উশাকভ ও রাশিয়ার সার্বভৌম সম্পদ তহবিলের প্রধান কিরিল দিমিত্রিয়েভ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর ল্যাভরভ জানান, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত একে অপরের দেশে রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেবে এবং সহযোগিতা পুনরুদ্ধারে কাজ করবে।
তিনি আরও বলেন, “এটি খুবই ফলপ্রসূ আলোচনা ছিল। আমরা একে অপরকে শুনেছি এবং বোঝার চেষ্টা করেছি।”
ল্যাভরভ রাশিয়ার আগের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ন্যাটোর সম্প্রসারণ ও ইউক্রেনের সদস্যপদ গ্রহণ রাশিয়ার জন্য সরাসরি হুমকি।
ইউক্রেনকে ছাড়াই শান্তি আলোচনা? মার্কো রুবিও আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, রাশিয়া “গভীর ও অর্থবহ আলোচনায় আগ্রহী”। তিনি বলেন, “সব পক্ষকেই কিছু ছাড় দিতে হবে। তবে এখনই বলার সুযোগ নেই, কে কী ছাড় দেবে।”
ইউক্রেনকে বৈঠকে না রাখার বিষয়ে রুবিও বলেন, “কেউই পাশ কাটিয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না। যুদ্ধে জড়িত প্রতিটি পক্ষের জন্য চুক্তিটি গ্রহণযোগ্য হতে হবে।”
তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এ বৈঠকের প্রতিক্রিয়ায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমাদের পেছনে আলোচনা চলবে, এটি মেনে নেওয়া যায় না। ইউক্রেন ছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধান করা যাবে না।”
ইউরোপীয় নেতাদের বিভক্ত প্রতিক্রিয়া এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া আলোচনার পর ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। প্যারিসে জরুরি বৈঠকে ইউক্রেন ইস্যুতে সবাই একমত হতে পারেননি।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার বলেছেন, ইউক্রেনকে রক্ষা করতে হলে “যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা” থাকতে হবে এবং প্রয়োজনে তিনি ইউক্রেনে ব্রিটিশ সেনা মোতায়েনের কথা বিবেচনা করবেন।
অন্যদিকে, জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ সেনা মোতায়েনের প্রসঙ্গকে “অতিশয় আগাম” বলে মন্তব্য করেছেন।
পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্কও সেনা পাঠানোর বিপক্ষে মত দিয়েছেন, আর ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেছেন, “শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সেনা পাঠানো সবচেয়ে জটিল ও কম কার্যকর উপায় হতে পারে।”
শেষ পর্যন্ত কী হতে পারে? ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সরাসরি আলোচনায় জেলেনস্কি স্বভাবতই উদ্বিগ্ন। তিনি জানেন, মার্কিন সহায়তা ছাড়া রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা প্রায় অসম্ভব।
এখন দেখার বিষয়, এই আলোচনার ফল কী দাঁড়ায় এবং ইউক্রেন কূটনৈতিকভাবে কতটা সক্রিয় হতে পারে।
০৪টি কলেজের পাঠদানের অনুমতি প্রত্যাহার এবং ০১টি কলেজের পাঠদানের অনুমতি স্থগিতকরণ প্রসঙ্গে।
January 27, 2025
Comments 0